Operation Sindoor: গত রাতের অন্ধকারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী একটি ঐতিহাসিক অভিযান চালানো হয়েছে, যার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) অবস্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলির ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করা। কিন্তু কেন এই অভিযান? কী ঘটেছে গত কয়েক দিনে? আসুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
পহেলগাঁও হামলা: অপারেশনের সূত্রপাত
২২ এপ্রিল, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের একটি পর্যটক এলাকায় জঙ্গিরা নিরীহ মানুষদের ওপর গুলি চালায়। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। ভারতীয় গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, এই হামলার পেছনে পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ (JeM) এবং লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT)-এর হাত ছিল। এরপরই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, “জবাব দেওয়া হবে আমাদের সময়ে, আমাদের পছন্দের জায়গায়”।
অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor): কী হলো রাতে?
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান ও PoK-এর ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লি থেকে রিয়েল-টাইমে এই অপারেশন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
লক্ষ্যবস্তুগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বাহাওয়ালপুর (পাকিস্তানের পাঞ্জাব): JeM-এর প্রধান ঘাঁটি, যেখানে মাওলানা মাসুদ আজহারের অনুগামীরা সক্রিয়।
- মুরিদকে (পাকিস্তান): LeT-এর প্রশিক্ষণ শিবির।
- কোটলি, বার্নালা (PoK): হিজবুল মুজাহিদিনের গোপন ক্যাম্প।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই হামলা পরিকল্পিত, পরিমিত ও অপ্ররোচনামূলক। শুধু জঙ্গি পরিকাঠামোই ধ্বংস করা হয়েছে, সাধারণ মানুষ বা পাকিস্তানি সেনাদের ক্ষতি হয়নি”।
কেন ‘সিঁদুর’ নাম?
এই নামকরণের পেছনে স্পষ্ট কারণ জানা যায়নি। তবে ভারতের সামরিক ইতিহাসে ‘অপারেশন’ শব্দের পর রঙের নাম যুক্ত করার একটি প্রথা আছে। যেমন—অপারেশন ব্লু স্টার, অপারেশন গ্রিন হান্ট। সিঁদুর রঙটি শক্তির প্রতীক, যা সম্ভবত এই অভিযানের দৃঢ়তার ইঙ্গিত দেয়। আবার পহেলগাঁও হামলায় কয়েকজন ভারতীয় নারী তাদের সিঁদুর হারিয়েছে, যা ইন্টারনেটে খুব আবেগপ্রবণ ভাবে ছড়িয়েছিল, এর কারণেও অপারেশন সিঁদুর নাম হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভারতের যোগাযোগ
অভিযানের পরই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক্স (টুইটার)-এ লিখেছেন, “ভারত মাতা কি জয়!”। পাকিস্তানের তরফে এখনও কোনো সরকারি প্রতিক্রিয়া না এলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাদের ৬টি স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অপারেশনের ফলাফল
- জঙ্গি ক্ষয়ক্ষতি: সরকারি দাবি অনুযায়ী, কমপক্ষে ১২-১৭ জন সন্ত্রাসী নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
- বাজার ও অর্থনীতি: অভিযানের প্রভাবে বুধবার সকালে ভারতীয় শেয়ার বাজারে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। টাকার মানও কিছুটা কমেছে।
- সীমান্তে উত্তেজনা: অপারেশন চলাকালীন পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি সেক্টরে সীমান্ত উল্লঙ্ঘন করলে ভারত তাৎক্ষণিক জবাব দেয়।
কেন এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ?
১. প্রতিশোধ নয়, প্রতিরোধ: পহেলগাঁও হামলার পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ।
২. সন্ত্রাসের উৎস ধ্বংস: PoK-এ জঙ্গি ক্যাম্পগুলি ধ্বংস করে ভবিষ্যৎ হামলা রোধ।
৩. আন্তর্জাতিক বার্তা: ভারতের সামরিক শক্তি ও কৌশলগত সক্ষমতার প্রদর্শন।
কী বলছে সাধারণ মানুষ?
দেশজুড়ে এই অভিযানকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে #OperationSindoor ট্রেন্ড করছে। কলকাতার এক যুবক বলেন, “এই জবাব দরকার ছিল। সেনাদের সম্মান জানাই।” তবে কিছু বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, পাকিস্তান যেন পাল্টা হামলা না করে।
ভবিষ্যৎ কী?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, আজ বুধবার একটি প্রেস কনফারেন্সে অপারেশনের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই জারি থাকবে।”
দাবিত্যাগ (Disclaimer)
এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই পোস্টে উল্লিখিত তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশিত খবর, সরকারি বিবৃতি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি। অপারেশন সংক্রান্ত যেকোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য বা চূড়ান্ত বিবরণ জানতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকা অনুসরণ করুন। এই পোস্টের উদ্দেশ্য কোনো রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক মতামত প্রকাশ নয়, বরং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পাঠকদের সচেতন করা। যেকোনো সংবেদনশীল বিষয়ে শেয়ার করার আগে সূত্র যাচাই করুন।
⚠️ সতর্কতা: সামরিক অভিযান ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিভ্রান্তি এড়াতে unverified দাবি বা গুজব শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।